বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগ

তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: উপাচার্য

মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) প্রবেশের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার। তিনি বলেছেন, তদন্ত করে প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার (৩০ মার্চ) সোয়া ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বুয়েট উপাচার্য।

সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করার জন্য যা যা করার সবই করা হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন এলে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।নিয়মবহির্ভূতভাবে একজনকে বহিষ্কার করলে সেটা আদালতে টিকবে না। নিয়মের মধ্যে সবকিছু করার জন্য সময়ের প্রয়োজন। যেহেতু রোজার মাস, সময় একটু বেশি দেওয়া উচিত ছিল। তদন্ত লাগবে এবং তদন্তে অভিযুক্তকেও আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। আমাদের আইন ও নিয়মানুযায়ী চলতে হবে।

তিনি বলেছেন, আজকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। আগামী ৮ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর এর সদস্যদের মতামত আমরা শুনবো। ইমতিয়াজকে হল থেকে বহিষ্কার আমরা করতে পারি। কিন্তু টার্ম বহিষ্কার শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক ডেকে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে করতে হবে। শৃঙ্খলা কমিটির সভার জন্য তদন্ত প্রতিবেদন লাগবে। তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া শৃঙ্খলা কমিটি কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না।

পরীক্ষা বর্জনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা পরীক্ষা স্থগিত করিনি। তারা (শিক্ষার্থী) বর্জন করেছেন। তারা পরীক্ষা স্থগিতের আবেদনও করেননি। তারা আবেদন করলে আমরা বিবেচনা করতাম। তারা এখানে ভুল করেছেন। পরীক্ষা হয়েছে, কিন্তু তারা পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন।

নিয়মানুযায়ী ঘণ্টা বাজবে, ছাত্ররা আসুক না আসুক- এমন ঘটনা বুয়েটে আগেও ঘটেছে। পরে তারা পরীক্ষার জন্য আবেদন করলে একাডেমিক কাউন্সিল বিবেচনা করতে পারে।

এদিকে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক মিজানুর রহমানের পদত্যাগের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ডিএসডব্লিউর পদত্যাগের বিষয়ে এখন আমরা চিন্তা করছি না। কারণ, এটা নরমাল একটা প্রসিডিউর। নিয়মানুযায়ী যখন হওয়ার হবে। ডিএসডব্লিউ বলেছেন, তার পক্ষ থেকে কোনো গাফিলতি ছিল না। শিক্ষার্থীরা দাবি করতেই পারেন। কিন্তু দাবির মুখে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। সময় হলে নতুন ডিএসডব্লিউ নিয়োগ দেবো।

মধ্যরাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের প্রবেশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বুয়েট উপাচার্য বলেন, নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে আমরা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবো। কেন তিনি ঢুকতে দিলেন। তার তো ঢুকতে দেওয়া উচিত হয়নি। গভীর রাতে কেউ (ক্যাম্পাসে) ঢুকলে এটা অবশ্যই অমানবিক বা অনিয়মতান্ত্রিক। কে ঢুকেছে, তাকে তো আগে চিহ্নিত করতে হবে। চিহ্নিত না করে তো শাস্তি দেওয়া যাবে না। তার জন্য সময় প্রয়োজন। যদি কোনো নিরাপত্তারক্ষী বহিরাগত ব্যক্তিদের ঢুকতে দিয়ে থাকেন, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

এর আগে শুক্রবার (২৯ মার্চ) বুয়েটে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশের ঘটনায় জড়িত শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বির স্থায়ী বহিষ্কার ও ডিএসডব্লিউ’র পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা এর অংশ হিসেবে শনিবার (৩০ মার্চ) কোন ক্লাস পরীক্ষায় অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি রোববারও (৩১ মার্চ) কোনো ক্লাস পরীক্ষায় বসবে না তারা।

পাঠকের মন্তব্য